জাতীয় ঐক্য কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ সোমবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে যে—যেকোনো পরিস্থিতিতেই ‘জরুরি অবস্থা’ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের দ্বিতীয় ধাপে দশম দিনের আলোচনার শেষে এ কথা জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, “সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদের (ক), (খ), (গ) উপধারাগুলো সংশোধন, সংযোজন-বিয়োজন ও সংস্কারের ব্যাপারেও রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে।” সোমবারের আলোচনায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা ও উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালত সম্প্রসারণের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আলোচিত হয়েছে বলেও জানান আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, “সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদে জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিধান থাকলেও এ বিষয়ে অতীতে তেমন আলোচনা হয়নি। এবার কমিশন একটি সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে, যা আগামী বৈঠকে আরও বিস্তারিত আলোচনা সাপেক্ষ।” তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো উপজেলা পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে অধস্তন আদালত সম্প্রসারণে সম্মত হয়েছে। তবে এই সম্প্রসারণে কিছু বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।” যেমন: সদর উপজেলার আদালতগুলো জেলা জজ আদালতের সাথে যুক্ত করতে হবে, বিদ্যমান চৌকি আদালত, আইল্যান্ড কোর্ট এবং প্রতিষ্ঠিত আদালতগুলো বজায় রাখতে হবে, জেলা সদরসংলগ্ন উপজেলায় নতুন আদালত না করে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে, এবং অন্যান্য উপজেলায় জনসংখ্যার ঘনত্ব, ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা, দূরত্ব, আর্থসামাজিক অবস্থা ও মামলার সংখ্যা বিবেচনায় ধাপে ধাপে নতুন আদালত স্থাপন করতে হবে। সোমবারের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি অংশ নেন। কমিশনের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।